পাহাড় ধসে বিপর্যস্ত সিকিম, না ঘুরেই শিলিগুড়ি ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশিদের
পাহাড় ধসে বিপর্যস্ত সিকিম, না ঘুরেই শিলিগুড়ি ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশিদের

পাহাড় ধসে বিপর্যস্ত সিকিম, না ঘুরেই শিলিগুড়ি ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশিদের
কলকাতা: একটানা বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসে বিপর্যস্ত ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য সিকিমের একাংশ। এ কারণে পর্যটন কেন্দ্রের অধিকাংশ সড়কই বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কেই আটকে থাকতে হয়েছিল দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। জীবন হাতে নিয়ে কোনোভাবে শিলিগুড়িতে ফিরে এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছেন তারা। ভয়ঙ্কর এই অভিজ্ঞতার সাক্ষী ছিলেন বাংলাদেশি পর্যটকরাও।
আবহাওয়া দফতর আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল ৯ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সিকিমসহ উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সঙ্গে পাহাড় ধসেরও সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছিল। সেই পূর্বাভাস মতোই গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার টানা বৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমের বিভিন্ন জায়গায়। আর তার জেরেই ধসে বিপর্যস্ত সিকিমের একাধিক এলাকা। বিশেষ করে উত্তর সিকিমের বেশ কয়েকটি এলাকায় ধসের কারণে একপ্রকার স্তব্ধ যান চলাচলসহ প্রায় সবকিছু।
এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কারণে সিকিম সরকার উত্তর সিকিমে যাওয়ার পারমিট বাতিল করেছে। ফলে এই মুহূর্তে উত্তর সিকিমে যাওয়া নিষিদ্ধ রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে পূজার এই মৌসুমে সিকিম বেড়াতে যান বাঙালিরা। আর তাতেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
মূলত, পূজার আগে থেকেই পর্যটক মৌশুম শুরু হয়ে যায়। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমেও ভ্রমণ করেন। কিন্তু, গত দুই বছর করোনার কারণে পর্যটকদের জন্য সিকিমের দরজা বন্ধ থাকায় সেভাবে পর্যটকরা যেতে পারেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই চলতি বছর সিকিমে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। এই মুহূর্তে কেবল দেশি পর্যটকরাই নয়, বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর লোক সিকিমে বেড়াতে যান। তবে, সেখানে গিয়ে এ ধরনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে হবে তা কল্পনাতেই আসেনি বলে জানান বাংলাদেশের একদল পর্যটক।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বাংলাদেশি পর্যটক আরিফিন ইমতিয়াজ বলেন, চলতি মাসের ৭ অক্টোবর তারা সিকিমে যান। এরপর তারা সোমবার (১০ অক্টোবর) উত্তর সিকিম বেড়াতে লাচুং থেকে জিরো পয়েন্টে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে একের পর এক সড়কে পাহাড় ধস হয়। এমন পরিস্থিতিতেই কোনো মতে প্রাণ নিয়ে তারা শিলিগুড়িতে ফিরতে পেরেছেন।
তিনি আরও জানান, অনেকটাই আতঙ্কে ছিলাম, কারণ আগে কখনো এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছেন, এটাই অনেক।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে সিকিমের অধিকাংশ জায়গায় ধসের কারণে সড়ক পথ বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে পর্যটকরা ভ্রমণের প্ল্যান কাটছাঁট করে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। আর তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে পারেন, সেজন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগম মঙ্গলবার রাত থেকে বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, ১১ অক্টোবর, ২০২২