পুনর্বিন্যাস হচ্ছে ভর্তুকির বরাদ্দ

পুনর্বিন্যাস হচ্ছে ভর্তুকির বরাদ্দ

পুনর্বিন্যাস হচ্ছে ভর্তুকির বরাদ্দ
পুনর্বিন্যাস হচ্ছে ভর্তুকির বরাদ্দ

পুনর্বিন্যাস হচ্ছে ভর্তুকির বরাদ্দ

অর্থবছরের অর্ধেক না যেতেই বাজেটে ভর্তুকির চাপ বাড়ছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় চলতি বাজেটে অতিরিক্ত ভর্তুকির চাহিদা জানিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগকে চিঠি দিচ্ছে। পাঁচ মন্ত্রণালয় প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি চাচ্ছে অর্থ বিভাগের কাছে। অথচ চলতি বাজেটে ভর্তুকিতে বরাদ্দই রয়েছে ৩৪ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ তাই চলতি বাজেটের ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করার চিন্তা-ভাবনা করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ ব্যাপারে অর্থ বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কভিড-পরবর্তী অর্থনীতিতে অনেক পণ্যের দাম উঠানামা করছে। সারা বিশ্বেই এমন হচ্ছে। ফলে আমরা যে হিসাব করে ভর্তুকির বরাদ্দ দিয়েছিলাম তাতে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। আমরা মন্ত্রণালয়গুলোর ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করার চিন্তা করছি। অর্থাৎ যার কম প্রয়োজন, তার বেশি থাকলে সেটি অন্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হতে পারে। তবে এটি এখনো চূড়ান্ত কিছু হয়নি।’

সূত্র মতে, চলতি অর্থবছরের মাত্র চার মাস পার হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ভর্তুকির টাকা দিতে অর্থ বিভাগকে চাপ দিচ্ছে। পাঠাচ্ছে চাহিদাপত্র। এরই মধ্যে পাঁচ মন্ত্রণালয় প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে। তবে এই চাহিদার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য ভর্তুকি সংকুলান রয়েছে আট হাজার ৫০০ কোটি টাকা, কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদারকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে সারের দাম বেড়ে গেছে। তাই যে পরিমাণ ভর্তুকি বরাদ্দ রয়েছে তাতে তাদের ‘পোষাবে’ না। এই মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং অধিশাখা অর্থ বিভাগকে জানিয়েছে, সারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য অনুসারে চলতি অর্থবছরে রাসায়নিক সার কেনার খরচ হবে বেশি। তাই প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকির প্রয়োজন হতে পারে। অর্থাৎ তাদের প্রয়োজন বরাদ্দের দ্বিগুণেরও বেশি। অন্যদিকে বিদ্যুতের জন্য চলতি বাজেটে ভর্তুকি বরাদ্দ আছে ৯ হাজার কোটি টাকা, কিন্তু বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এই টাকায় তাদের চাহিদা মেটবে না। চলতি অর্থবছরের জন্য বিদ্যুতের ভর্তুকি দরকার কম করে হলেও ১২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া আরো তিনটি মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি হিসেবে চাওয়া হয়েছে বলে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এই যখন অবস্থা, তখন অর্থ বিভাগ থেকে পুরো ভর্তুকি বিষয়টি নতুন করে বিন্যাস করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই বিভাগ থেকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক উইংকে চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কী পরিমাণ ভর্তুকি প্রয়োজন হতে পারে তার একটি মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক উইংয়ের মূল্যায়ন পাওয়ার পর চলতি অর্থবছরের ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩৪ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা।