আমরা ভালো থাকবো ( গল্প )

"পৃথিবী আবার শান্ত হবে,ফিরে আসবে জীবনের ছন্দ,আশা এখনো আছে বাকি। ভরসা রাখ অনিকেত।"  হ্যাঁ, ঠিক এমনই কিছু কথা বলেছিল সুদীপ, অনিকেতকে সেদিন হসপিটালের সামনে দাঁড়িয়ে।

আমরা ভালো থাকবো ( গল্প )
আমরা ভালো থাকবো ( গল্প ), story bangla, bangla story new

আমরা ভালো থাকবো ( গল্প )

"পৃথিবী আবার শান্ত হবে,ফিরে আসবে জীবনের ছন্দ,আশা এখনো আছে বাকি। ভরসা রাখ অনিকেত।"  হ্যাঁ, ঠিক এমনই কিছু কথা বলেছিল সুদীপ, অনিকেতকে সেদিন হসপিটালের সামনে দাঁড়িয়ে। যেদিন হসপিটালে করোনা আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় জীবন মরনের সন্ধিক্ষণে ছিল মৃত্তিকা। অনিকেত শুধু বলে যাচ্ছিল... "সব শেষ হয়ে গেল সুদীপ। চারিদিকে শুধু গভীর অন্ধকার আর অনিশ্চয়তা। এ আমারই ভুলের শাস্তি। সব দোষ আমার।"
অনিকেত আর মৃত্তিকা দুজনে যেন দুজনের জন্যই তৈরি। একে অপরের পরিপূরক। একজন ছাড়া যেন আরেকজন অসম্পূর্ণ। সেই ইউনিভার্সিটি লাইফ থেকে সুদীপ চেনে এদের দুজনকে। যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে মৃত্তিকা পড়তো তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে আর অনিকেতের বিষয় ছিল অংক তবে অনিকেত ছিল এক বছরের সিনিয়র মৃত্তিকার থেকে।
ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছাত্রীদের নিয়েই একটা গ্রুপ ছিল তাদের। সুদীপ ছিল সেই গ্রুপেরই একজন, আর অনিকেতের বিশেষ বন্ধু। তারা একটা লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ করত। একটা ছোট বাংলা গানের ব্যান্ডও ছিল তাদের। মৃত্তিকা সেই লিটল ম্যাগাজিনে ধারাবাহিকভাবে কবিতা লিখত। আর অনিকেত.. গান গাইত। মৃত্তিকা দু-একবার গানও লিখেছে.. ওদের ব্যান্ডের জন্য। সেই সূত্রেই অনিকেতের আর মৃত্তিকার আলাপ। দুজনের পড়ার বিষয় আলাদা থাকলেও দুজনের চিন্তাভাবনার কিন্তু দারুণ মিল ছিল। 
দুজনেই চাইতো পড়াশোনা শেষ করে সরকারি চাকরি করতে। আর তার পাশাপাশি চলবে গান আর লেখালেখি।  দুজনেই ছিল মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তবে মৃত্তিকাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অনিকেতের থেকে খারাপই ছিল। খুব ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছি মৃত্তিকা। দুই কামরার একটা বাড়ি, সামনে কিছুটা জমি আর বাবার কিছু সঞ্চিত অর্থ তাই দিয়েই চলেছে….. তিন জনের জীবন…
সে , মা আর তার ভাই।
ক্লাস টেন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকেই মৃত্তিকা প্রাইভেট টিউশন শুরু করে। নিজের টিউশনের টাকাতেই প্রায় চলে তার আর তার ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ। খুব কষ্ট করে বড় হয়েছে সে। মৃত্তিকা... সেই অর্থে খুব সুন্দরী ছিল না কোনদিনই। গায়ের রং একটু চাপা, মাঝারি গড়ন তবে নজর কাড়ার মতো যেটা ছিল.. সেটা হল ওর ব্যক্তিত্ব, আত্মসম্মানবোধ আর দুটো উজ্জ্বল চোখ। বরাবরই খুব লড়াকু ছিল মৃত্তিকা।
ইউনিভার্সিটির সময় থেকেই ওরা একে অপরকে ভালবাসত। দুজনে মিলে ভবিষ্যতে একসাথে থাকবে, সংসার করবে এমন স্বপ্ন ছিল ওদের। দুজনে মিলেই চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো একসঙ্গে। একসঙ্গে ফর্ম  জমা করা,পরীক্ষা দিতে যাওয়া এইসব চলছিল। দুজনে- দুজনার পাশে থেকে, একসাথে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছিল। অর্থের জোর ওদের ছিল না তবে বেশ ছিল দুজনে। একদিন চা কিংবা ঝাল মুড়ির পয়সা অনিকেত দিলে পরের দিন দিত মৃত্তিকা। এমনি বোঝাপড়া ছিল ওদের দুজনের মধ্যে।পড়াশোনার মাঝেমাঝে কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়াতে একসাথে হেঁটে পুরনো বই কেনা, নন্দনে মাঝে মাঝে সিনেমা দেখা, একাডেমিতে নাটক দেখা এভাবেই চলছিল দুজনের জীবন।
কিন্তু এরপর ঘটলো বিপত্তি। একবছরের সিনিয়র হওয়ায় অনিকেত পাশ করে বের হলো এক বছর আগেই । তারপরই একটা ব্যাংক পি.ও পরীক্ষায় পাশ করল সে। এক
সরকারি ব্যাংকে অফিসার হিসেবে যোগ দিল । এরপর নতুন চাকরি নিয়ে বেশ ব্যস্ত হয়ে গেল অনিকেত। গানের ব্যান্ডে আসাও কমতে লাগল তার। মৃত্তিকার সাথেও কমতে লাগল যোগাযোগ। ফোন করলেই অনিকেত বলতো " সে খুব ক্লান্ত । একটানা এতক্ষন কাজ। নতুন চাকরি ,পারফরম্যান্স ভালো হওয়া খুব জরুরী।"  মৃত্তিকাও জোর করেনি কোনদিন । নিজের ভালবাসার উপর ভরসা ছিল খুব। কিন্তু কিছুদিন পর সে তার বন্ধুদের মুখে শুনল অনিকেতকে নাকি আজকাল একটি খুব সুন্দরী মেয়ের সাথে প্রায়ই শপিংমলে, দামি রেস্তোরাঁয়, সিনেমা হলে, দেখা যায় । অনিকেতকে মৃত্তিকা জিজ্ঞাসা করায় সে বলেছিল "মেয়েটির নাম রূপাঞ্জনা। সে নাকি তার ব্যাংকে এসেছিল কার লোনের জন্য।সেই সময় তার সাথে পরিচয় এবং নেহাতই বন্ধুত্বের সম্পর্ক।" 
না…, এরপর আর কথা বাড়ায়নি মৃত্তিকা। ইচ্ছে হয়নি। মন চায়নি ।  সোশ্যাল মিডিয়াতে সে খুব একটা অ্যাক্টিভ ছিল না  কোনোদিনই কিন্তু বন্ধুরাই তাকে দেখালো... রূপাঞ্জনা, অনিকেতের সাথে তোলা অনেক ছবি পোস্ট করেছে সোশ্যাল মিডিয়াতে । 
সে দেখল রূপাঞ্জনা বেশ সুন্দরী, স্মার্ট, পরনে ব্র্যান্ডেড পোশাক, দামি সানগ্লাস, দামি গাড়ি। এরপর আর যোগাযোগ রাখেনি মৃত্তিকা অনিকেতের সাথে। অনিকেতও কোন খোঁজ-খবর করে নি। অনিকেত ভাল থাক, এটাই মেনে নিয়েছিল সে। মনে মনে খুব কষ্ট পেলেও তার বহিঃপ্রকাশ কখনো দেখেনি কেউ।
এরপর হঠাৎ করেই আসে এই মহামারী, করোনা। সাথে আসে লকডাউন। বাড়ি থেকে দূরের টিউশনগুলো চলে যায় মৃত্তিকার। চরম অর্থ সংকটে পড়তে হয় তাকে। তারপর আস্তে আস্তে শুরু করে অনলাইনে পড়ানো। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হয়ে উঠছিল আর তার কিছুদিনের মধ্যেই এল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। সব ওলট-পালট হয়ে গেল। মৃত্যুহার ক্রমশ বাড়তে লাগলো। হসপিটালের অভাব, অক্সিজেনের অভাব, ওষুধের অভাব, মানুষ বড় অসহায় হয়ে উঠলো। বড় বড় ডাক্তার বিজ্ঞানীরাও দিশেহারা। কখনো বা পরিচিত মানুষ বা কাছের মানুষের মৃত্যুর সংবাদ আর প্রিয়জনের জন্য দুশ্চিন্তা, এই হয়ে গেল জীবনের অঙ্গ। 
কিন্তু এরই মধ্যে আশার কথা হলো... এত অনিশ্চয়তার মধ্যেও ভালোবেসে সম্পূর্ণ স্বার্থহীনভাবে অনেক মানুষ এগিয়ে দিলেন সাহায্যের হাত। এগিয়ে এলো নতুন প্রজন্মের অনেক কিশোর কিশোরী যুবক-যুবতীও। 
লিটল ম্যাগাজিন গ্রুপের এবং গানের ব্যান্ডের সব বন্ধুরা একত্রিত হয়ে সংঘবদ্ধভাবে একটা গ্রুপ তৈরি করল। মৃত্তিকাও যোগ দিল। হসপিটালের ব্যবস্থা করাই হোক বা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা,খাবার পৌঁছে দেওয়া, রাতদিন জেগে তারা এসব কাজ করতে লাগলো।
ঠিক এই সময় একদিন মৃত্তিকার সাথে দেখা হয় অনিকেতের।মৃত্তিকা যে অটোতে ছিল সেই অটোতেই ওঠে অনিকেত। অনেকদিন পর মুখোমুখি হয় তারা। মৃত্তিকা অনুভব করে এখনো অনিকেতকে দেখলে তার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। নীরবতা ভেঙে অনিকেতই প্রথম প্রশ্ন করে 
-------কেমন আছিস?
------ চলে যাচ্ছে রে।এই পরিস্থিতিতে যেমন থাকা যায় আর কি।
-------- তোর চাকরির কিছু হল? 
-------না রে এখনো পর্যন্ত না।এখনের পরিস্থিতিতেও এরকমই চলছে।তবে পেয়ে যাব এটুকু ভরসা আমার নিজের ওপর আছে।বেশ জোর দিয়ে বলল মৃত্তিকা।আমি পরের স্টপেজে নেমে যাব?তুই কোথায় নামবি?
------ তার পরের স্টপেজে….. 
মৃত্তিকা নেমে গিয়ে অটোওলাকে বলল "দাদা দুটো টিকিটের পয়সা নিন।" 
অনিকেত অটো থেকে বলল "দুটো টিকিট পয়সা দিচ্ছিস কেন?" 
মৃত্তিকা বলল "তুই ভুলে গেছিস,শেষ যেদিন আমাদের দেখা হয়েছিল সেদিন আমার  অটো ভাড়াটা তুই দিয়েছিলি! আমারটা বাকী ছিল। আজ শোধ হয়ে গেল। ভালো থাকিস।"
এরপর অনিকেতকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই খুব দ্রুত হেঁটে চলে গেল মৃত্তিকা।
অনিকেত অটোতে বসে ভাবতে লাগলো রূপাঞ্জনার সাথে মৃত্তিকার সত্যি কত তফাৎ।
আজ অব্দি যতবার হোটেলে খেয়েছে, সিনেমা দেখেছে, বেড়াতে গেছে, তার সমস্ত খরচটুকু অনিকেত করেছে। এছাড়াও দামি দামি গিফ্ট। সব সময় শুধু ঐশ্বর্যের দেখনদারি। কখনো কোথাও খেতে গেলে, খাবার সামনে রেখে ছবি তোলা চলতে থাকে বেশ কিছুক্ষণ, নতুন মোবাইলের ছবি, নতুন পোশাকের ছবি। মাঝে মাঝে বড় দমবন্ধ লাগে অনিকেতের।
রূপাঞ্জনার রূপে মুগ্ধ হয়ে ওর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল সে। কিন্তু এখন বুঝতে পারে মনের মিল দুজনের একেবারেই নেই। ওর সাথে ঘুরতে ঘুরতে এক প্রকার ক্লান্ত হয়ে পড়েছে অনিকেত। বন্ধু-বান্ধব,গান,পড়াশোনা, সবকিছু থেকেই সে অনেক দূরে চলে গেছে। বড় বোঝার মত লাগছে তার এই সম্পর্ক। আজকাল রূপাঞ্জনার কাছ থেকে সে পালিয়ে বেড়ায়। সে বুঝতে পেরেছে যে রূপাঞ্জনাকে সে ভালোবাসে না।
আসলে মৃত্তিকা হলো মহা সমুদ্রের মতো। যে মৃত্তিকাকে ভালোবেসেছে তার আর কাউকে ভালোবাসা সম্ভব নয়। আজ মৃত্তিকাকে দেখে খুব খারাপ লাগছিল অনিকেতের। বড্ড শুকনো লাগছিল মৃত্তিকার চেহারা। চোখের তলায় কালি পড়ে গেছে। এমন একটা কঠিন সময় মেয়েটা কেমন আছে তার খোঁজটুকু পর্যন্ত করেনি অনিকেত। আসলে মৃত্তিকার সামনে গিয়ে দাঁড়াবে সেই সাহসটুকু সঞ্চয় করে উঠতে পারিনি অনিকেত।
এরপর হঠাৎ করেই একদিন খবর পেল অনিকেত, মৃত্তিকা করোনা আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় হসপিটালে আই.সি.ইউ তে ভর্তি। ডাক্তাররা জানিয়েছেন মৃত্তিকার শরীর খুব দুর্বল,খাওয়া-দাওয়া বা ঘুম বেশ কিছুদিন করেনি ঠিকমত।
খবরটা শোনার পর একমূহূর্ত দেরী করেনি অনিকেত। পাগলের মতো ছুটে গিয়েছে হসপিটালে। ইউনিভার্সিটির সব বন্ধুরাই উপস্থিত ছিল হাসপাতালের বাইরে। বন্ধুদের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে অনিকেত। বারবার বলতে থাকে "সব দোষ আমার। কি করে আমি এত বড় ভুল করলাম।"
সারাদিন,সারারাত ধরে অপেক্ষা করতে থাকে অনিকেত হসপিটালের বাইরে। বন্ধুরা অনেক বুঝিয়েও তাকে বাড়ি ফেরাতে পারে নি।শুধু সান্তনা দিয়ে গেছে যে সব ঠিক হয়ে যাবে। সব আগের মত হয়ে যাবে।
হ্যাঁ, এর কিছুদিন পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠল মৃত্তিকা। শুনলো.. অনিকেতের কথা বন্ধুদের মুখে।
এরপর অনিকেত গেল মৃত্তিকার কাছে, বলল... "জীবনের মাঝখানের কয়েকটা পাতাকে ছিড়ে ফেলে আবার নতুন করে যদি ভালোবাসার কথা লেখা যায়। একবার চেষ্টা করে দেখ না। মনটা ভেঙে গেছে রে । সেই অর্থে বলতে পারিস একটা আস্ত হৃদয় টুকরো করে রেখে গেলাম তোর কাছে পারলে জুড়ে  দিস। আমি জানি তুই পারবি।"
হ্যাঁ, জুড়ে দিয়েছিল মৃত্তিকা অনিকেতের ভাঙ্গা হৃদয়ের টুকরোগুলো। তারপর দুজনে একসাথে এসে দাঁড়িয়েছিল আর্ত মানুষগুলোর পাশে। অনিকেতেরও ভুল হয়নি আর নিজের জায়গাটা চিনে নেওয়ার। 
এমনই এক দিনের কথা মনে পড়ে সুদীপের বাইরে তখন নেমেছে প্রবল শ্রাবণের ধারা। এমন আকাশ ভরা বৃষ্টিতে কলকাতা পুরো জলমগ্ন। গাড়ি তাড়াতাড়ি এগোতে পারছে না। সেই জলমগ্ন রাস্তায় মৃত্তিকা আর অনিকেত একে অপরের হাত ধরে বন্ধুদের সাথে এগিয়ে চললো রোগীদের জন্য খাবার আর প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র পৌঁছে দিতে।
এরপর পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে,  একটা প্রাইভেট স্কুলে চাকরি পায় মৃত্তিকা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠতেই তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
আজ অনিকেত আর মৃত্তিকার বিয়ের রিসেপশনে দাঁড়িয়ে সেদিনের ওই কথাগুলো মনে পড়ে যাচ্ছিল সুদীপের। না! আয়োজনের খুব একটা আধিক্য করেনি ওরা দুজন, তবে আন্তরিকতার কোন অভাব নেই। আজ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত তাদের সকল বন্ধুবান্ধব। ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা, লিটল ম্যাগাজিনের বন্ধুরা, গানের ব্যান্ডের বন্ধুরা, সর্বোপরি সেই সব বন্ধুরা যারা একসঙ্গে মহামারী সময় ত্রস্ত, অসহায় মানুষগুলোর পাশে ছিল। বেশ খুশি খুশি লাগছে সকলকে। বাতাসে হালকা সানাইয়ের সুর, রজনীগন্ধার গন্ধ সব মিলিয়ে বেশ লাগছে।
অনিকেত আর মৃত্তিকার জন্য আনা একগুচ্ছ গোলাপ হাতে নিয়ে এইসব কথাই ভাবছিল এতক্ষন সুদীপ। 
হঠাৎ অনিকেত বলল  "কি ভাবছিস সুদীপ? একা একা এখানে দাঁড়িয়ে। আয় একসাথে একটা গ্রুপ ফটো তুলি।"
এরপর অনিকেত আর মৃত্তিকার হাতে সুদীপ তুলে দিলো গোলাপগুলো। শুভেচ্ছা জানালো ওদের নতুন জীবনের জন্য। তারপর তোলা হলো গ্রুপ ফটো। অনেকদিন পর সকলে দাঁড়ালো একসাথে কোন সামাজিক দূরত্ব না রেখে। তোলা হলো ভালো লাগার ছবি, ভালোবাসার ছবি।

লেখিকাঃ___সুস্মিতা রায়চৌধুরী